মাটির পুষ্টি উপাদান ও পরিবেশের
ভারসাম্য রক্ষায় পাটের গুরুত্ব
ড. মো. আবদুল আউয়াল১ ড. মো. আবু সায়েম জিকু২
পাট পরিবেশবান্ধব, বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য প্রাকৃতিক আঁশ, যা গোল্ডেন ফাইবার নামে পরিচিত এবং এটি আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে জড়িত। বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার প্রায় ৫% পাট থেকে আসে এবং দেশের জিডিপিতে এর অবদান প্রায় শতকরা ৪ ভাগ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের বর্ষপণ্য এবং ১লা মার্চ ২০২৩ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর তথ্য মতে, বর্তমানে পাট উৎপাদন ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে ১ম স্থান দখল করে আছে।
পাট একটি ফটোপিরিয়ড সংবেদনশীল এবং স্বল্প দিনের উদ্ভিদ। দিনের দৈর্ঘ্য ১২.৫ ঘণ্টা বা তার নিচে হলেই আগাম ফুল আসতে পারে, আবার ১২.৫ ঘণ্টা বা তার বেশি হলে ফুল আসা বিলম্বিত হতে পারে। তাই নির্ধারিত সময়ের আগে বীজ বপন করলে পাট ফসলে আগাম ফুল আসে, তখন গাছের মাথা ফেটে যায়, অবাঞ্ছিত শাখা-প্রশাখা জন্মায়, গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, আঁশের গুণগতমান খারাপ হয় এবং ফলনও কম হয়। আবার দেরিতে বপন করলে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায় না, কাজেই ভালো ফলন এবং তিন অথবা চার ফসলি শস্যপর্যায়ে পাটকে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে যথাসময়ে বীজ বপন করা অপরিহার্য। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) দেশের কৃষি পরিবেশ ও কৃষকদের চাহিদা বিবেচনায় নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে এবং পাট ফসলের উপর বিভিন্ন ধরনের গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত বিজেআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল ৫৬টি পাট ও পাট জাতীয় আঁশ ফসলের জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতার সংক্ষিপ্ত আকারে পাটের কৃষিতাত্ত্বিক পরিচর্যা ও মাটির পুষ্টি উপাদান ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এর গুরুত্ব তুলে ধরা হলো।
পাটের কৃষিতাত্ত্বিক পরিচর্যা
বাংলাদেশে পাট ফসল আবাদ করার জন্য বপনের সময়, জমি নির্বাচন, জলবায়ু, সঠিক আন্তঃপরিচর্যা এবং সমন্বিত মাটি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত। তা না হলে পাট ফসলের কাক্সিক্ষত ফলন সম্ভব নয়।
বপনের সময়
বীজ ফসলের ফুল ধরার জন্য দিনের দৈর্ঘ্য কম দরকার হয় বলে, আগস্ট-সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশি^ন) মাসে বীজ বপন করা হয় যাতে ফুল আসার আগেই গাছটি যথেষ্ট অঙ্গজ বৃদ্ধি হতে পারে। বপনের ৩-৪ মাস পরে ডিসেম্বর-জানুয়ারি (অগ্রহায়ণ-পৌষ) মাসে বীজ সংগ্রহ করা হয়। যদিও এ সময় পাট গাছের দৈর্ঘ্য লম্বায় ২-৪ ফুট কম হলেও অধিকসংখ্যক ডালপালাসহ সুপুষ্ট ফল ধারণ করে, যা থেকে অধিক পরিমাণ ও গুণগত মানসম্পন্ন উন্নত মানের বীজ পাওয়া যায়। অন্যদিকে, আঁশ হিসেবে পাট চাষ করার জন্য মার্চ-এপ্রিল মাস (মধ্য চৈত্র হতে মধ্য বৈশাখ) পাট বীজ বপন করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়, তবে তোষা পাটের ক্ষেত্রে মধ্য মে পর্যন্ত বপন করা যায়।
বীজের পরিমাণ ও বপন পদ্ধতি
ছিটিয়ে বপন পদ্ধতির ক্ষেত্রে হেক্টরপ্রতি ৭.৫ কেজি (প্রতি শতাংশে ৩০ গ্রাম) এবং সারিতে বপন পদ্ধতির ক্ষেত্রে হেক্টরপ্রতি ৬.২৫ কেজি (প্রতি শতাংশে ২৫ গ্রাম) পরিমাণ বীজ প্রয়োজন হয়। সারিতে বপন করলে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেমি. (প্রায় ১ ফুট) এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৭ সেমি. (প্রায় ৩ ইঞ্চি) রাখা ভালো।
জমি নির্বাচন
জমি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণত তোষা পাটের জন্য দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি সমৃদ্ধ উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি নির্বাচন করা ভালো, যেখানে বৃষ্টি বা বন্যার পানি না জমে অর্থ্যাৎ দ্রুত পানি নিষ্কাশিত হয়। দেশী পাট মাঝারি উঁচু থেকে নিচু জমি এবং কেনাফ/মেস্তা উঁচু নিচু অথবা অসমতল এমনকি পতিত জমিতেও চাষ করা যায়।
পাট বীজের সঠিক অঙ্কুরোদগমের জন্য সুষম চাষের প্রয়োজন কারণ পাটের বীজ আকারে খুবই ছোট। চাষের সংখ্যা সাধারণত মাটির ধরনের উপর নির্ভর করে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, মাটির ধরন/টেক্সচার অনুযায়ী ৩-৬ চাষ দেওয়া যেতে পারে। চাষের সময় আগাছা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে, তা না হলে জমিতে আগাছার পরিমাণ বেশি হবে এবং নিড়ানি খরচ বৃদ্ধি পাবে যার ফলশ্রুতিতে, ফসল উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটবে, রোগ ও পোকামাকড় এর আক্রমণ বৃদ্ধি পাবে এবং ফলন কম হবে। চাষের পরে ক্ষেতের মাটি যথাযথভাবে সমতল/সমান করতে হবে।
তাপমাত্রা ও জলবায়ু
পাটের জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুর তাপমাত্রা প্রয়োজন। ভালো বৃদ্ধি ও উচ্চমাত্রার ফলনের জন্য ২৫০ মিমি থেকে ২৭০ মিমি বৃষ্টিপাত দরকার হয়। এ ছাড়াও সঠিক বীজের হার সর্বাধিক ফলনের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
সার প্রয়োগ
পাট বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সার প্রয়োগ অতীব গুরুত্বপূর্ণ। জমিতে শেষ চাষের সময়, নির্দিষ্ট ডোজের ইউরিয়া (১৫০ গ্রাম/শতাংশ), টিএসপি (২০০ গ্রাম/শতাংশ) ও এমওপি (১২০ গ্রাম/শতাংশ) প্রযোগ করতে হবে। মাটি পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় জমিতে জিপসাম, জিংক ও বোরিক এসিড এর অভাব রয়েছে তাহলে প্রতি শতাংশে ১০০ গ্রাম জিপসাম, ৫০ গ্রাম জিংক ও ৫০ গ্রাম বোরিক এসিড প্রয়োগ করতে হবে। দ্বিতীয় কিস্তির সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে, দুই-এক দিন পূর্বেই নিড়ানি দিয়ে জমির আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং ৩য় বা শেষ কিস্তির সার প্রয়োগের পূর্বে একইভাবে আগাছা পরিষ্কার করে উপরিপ্রয়োগ হিসাবে শুধুমাত্র প্রতি শতাংশে ১৫০ গ্রাম ইউরিয়া সারপ্রয়োগ করতে হবে যেন বীজ উৎপাদনের ফলনে কোন ঘাটতি না হয়। তবে উপরিপ্রয়োগের সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, সাধারণত শুকনো ঝুরঝুরে মাটি বা ছাইয়ের সঙ্গে মিশ্রিত করে উপরিপ্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
আঁশ ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে ইউরিয়া (৮১০ গ্রাম/শতাংশ), টিএসপি (২০০ গ্রাম/শতাংশ), এমওপি (৩৬০ গ্রাম/শতাংশ), সালফার (১৮০ গ্রাম/শতাংশ) ও জিংক সালফেট (মনো) (৩৬০ গ্রাম/শতাংশ) প্রযোগ করতে হবে। শুধুমাত্র ইউরিয়া সার ৩টি সমান কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে এবং বাদবাকি সার শেষ চাষের সময় মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। জাত ও অঞ্চলভেদে সারের মাত্রার ভিন্নতা হতে পারে।
আন্তঃপরিচর্যা
পাট উৎপাদনের জন্য আন্তঃপরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই নজর দিতে হবে আগাছা দমনের ক্ষেত্রে। সাধারণত বপনের ২০-২৫ দিন পর প্রথম, ৪০-৪৫ দিন পর দ্বিতীয় ও ৬০-৬৫ দিন পর ৩য় নিড়ানি দিতে হবে। তবে উল্লেখ্য যে, শস্য-আছাগা প্রতিযোগিতার প্রথম ৪০ দিন আগাছামুক্ত রাখতে হবে। নিড়ানি দিয়ে মাটি আলগা করে দিতে হবে যেন আলো-বাতাস চলাচলে বিঘœ না ঘটে। যার ফলে মাটিতে দীর্ঘদিন রস জমা থাকবে এবং ফসল কাটা পর্যন্ত রসের সাধারণত অভাব হবে না এবং গাছের বৃদ্ধিও অবহ্যাত থাকবে। অন্য কোন গাছের মিশ্রণ এড়াতে ফসলের উৎপাদনের সময় অবাঞ্ছিত গাছ তুলে ফেলা অথবা অন্য জাতের বা আগাছার গাছ বা সন্দেহ যুক্ত যেকোন গাছসহ অতিরিক্ত গাছ বীজ ফসলের জমি হতে তুলে ফেলতে হবে। মানসম্মত পাট আঁশ ও বীজ উৎপাদন করার ক্ষেত্রে পোকামাকড় দমন করাও খুবই জরুরি।
অধিক ফলন ও গুণগত মানসম্পন্ন আঁশ পাওয়ার জন্য নির্ধারিত সময়ে বপনকৃত পাট গাছ ১০০-১২০ দিনে কাটা ভালো। পাট গাছ কাটার পর ১০-১২টি পাট গাছ একত্রে করে আটি বেঁধে ৩-৪ দিন জমিতে খাঁড়া করে রেখে দিয়ে জাগ দিলে, আঁশের রং উজ্জ্বল হয় পাশাপাশি আঁশ ছড়ানোও সহজতর হয়।
মাটির পুষ্টি উপাদান ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাটের গুরুত্ব
মাটি হচ্ছে কৃষির অন্যতম উপাদান। উপযুক্ত মাটি (প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান সমৃদ্ধ মাটি) না হলে, কাক্সিক্ষত ফলন আশা করা যায় না। মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় পাট ফসলের গুরুত্ব অপরিসীম। পাট ফসল পরিবেশবান্ধব হওয়ার কারণে পাট আবাদকৃত জমির মাটি তুলনামূলকভাবে অন্য ফসল আবাদকৃত জমির মাটি অপেক্ষা অধিক পুষ্টি ও গুণগতমান সম্পন্ন হয়।
পাট গাছের পাতায় প্রচুর পরিমাণ নাইট্রোজেন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও সোডিয়াম থাকে। জমিতে পাটের পাতা ও গোড়া পচে জমির উর্বরতা বাড়ায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পাট উৎপাদন কালে হেক্টরপ্রতি ৫ থেকে ৬ টন পাট পাতা মাটিতে পড়ে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ পাট হয়, তা হতে বছরে গড়ে ৯৫৬.৩৮ হাজার টন পাতা এবং ৪২৩.৪ হাজার টন মূল মাটিতে যুক্ত হয়, যা পচে মাটির সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, ডলোমাইট, ফেরাস সালফেট প্রদানের মাধ্যমে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। এতে পরবর্তী ফসল উৎপাদনের সময় সারের খরচ কম লাগে। যে জমিতে পাট চাষ হয়, সেখানে অন্যান্য ফসলের ফলনও ভালো হয়। পাটগাছের মূল মাটির ১০-১২ ইঞ্চি বা তারও অধিক গভীরে প্রবেশ করে যা মাটির উপরিস্তরের প্লাওপ্যান ভেঙে দেয় এবং মাটি হতে পুষ্টি উপাদান গ্রহণে সহজলভ্য করে তোলে। এ ছাড়াও পাটজাত পণ্য শতভাগ পচনশীল হওয়ায়, এটি পলিথিনের মতো মাটির ছোট ছোট ছিদ্রগুলোকে বন্ধ করে না। ফলে মাটিতে অক্সিজেন সরবরাহ ভালো থাকে এবং মাটির বিভিন্ন উপকারী অণুজীবের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। গবেষণার তথ্য মতে, ১০০ দিন সময়ের মধ্যে এক হেক্টর পাট ফসল বাতাস থেকে প্রায় ১৪.৬৬ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং ১০.৬৬ টন অক্সিজেন ত্যাগ করে বায়ুম-লকে পরিশোধিত করে। ফলে পাট ফসল পৃথিবীর গ্রিন হাউজ গ্যাস ও তার পরিপ্রেক্ষিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে কিছুটা হলেও ব্যাহত করে। এ ছাড়াও পাট পচানোর সময় যে গ্যাস উৎপন্ন হয় তাতে ৫০% থেকে ৬০% মিথেন থাকে, যা থেকে বসতবাড়িতে বা শিল্প কারখানায় ব্যবহার উপযোগী জ্বালানি গ্যাস তৈরি করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পাটের শিল্প গবেষণার মাধ্যমে জুট-জিও-টেক্সটাইল উদ্ভাবন করেছে। এ সস্তা এবং পরিবেশবান্ধব পণ্যটির মাধ্যমে ভূমির ক্ষয়রোধ করাসহ রাস্তার উপরিভাগে রাস্তার মাটি ধস ঠেকাতে, নদীর বাঁধ/তীর, পাহাড়ের ঢাল, সেচ নালার ভাঙন প্রতিরোধসহ বিভিন্ন প্রকার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির জঙ্গল বাড়ির গড়াই নদীতে ৪০০ মিটার, গোলালগঞ্জ এর আঁড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে ২০০ মিটার ও ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্পসহ বিভিন্ন স্থানে জুট-জিও-টেক্সটাইল ব্যবহার করা হয়েছে। পাট পরিবেশবান্ধব যে কারণে বিশ^ব্যাপী পাটের ব্যবহারও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
অর্থনীতিতে পাটের গুরুত্ব
পাট ও পাটজাতীয় আঁশ ফসল হতে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ছাড়াও বর্তমানে পাটপাতা থেকে তৈরি হচ্ছে অর্গানিক চা। এটি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এর মাধ্যমে দেশীয় যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। পাটের আরেকটি সম্ভাবনাময় দিক হলো মেস্তাপাট। পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণার মাধ্যমে মেস্তা পাট থেকে তৈরি হচ্ছে আইসক্রিম, চা, জ্যাম, জেলি, জুস, আচার ও পানীয়সহ হরেকরকম খাদ্যপণ্য। ধারণা করা হচ্ছে, এসব খাদ্যপণ্য বাজারজাত করা গেলে দেশের অর্থনীতিতে যোগ হবে হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে প্রতি বছর পাটকাঠির গড় উৎপাদন ২৪৮০.৬২ হাজার টন। কাঠের জায়গায় পাট দিয়ে কাগজের পাল্প তৈরি করলে কাগজের উৎপাদন খরচ কমবে। পাটের কাঠি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হলে কাঠের ওপর নির্ভরতা হ্রাস পাবে, যা বনভূমি উজাড় কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি।
বর্তমান সরকারের নানা পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও সোনার বাংলা গড়ার যে প্রত্যয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছানোর যে লক্ষ্য, সেটি অর্জনে আমাদের অন্যতম চালিকাশক্তি হবে পাট ও পাটজাতীয় পণ্য। পরিশেষে, আসুন আমরা সকলে মিলে পাটজাত পণ্য ব্যবহার করি এবং মাটি ও পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি।
লেখক : মহাপরিচালক১ ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা২ মৃত্তিকা বিজ্ঞান শাখা, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, মানিক মিয়া এভিনিউ, ঢাকা-১২১৫। মোবাইল : ০১৭১৭৫৬২৬৭৩, ই-মেইল : লরশঁষু@মসধরষ.পড়স